ঘরের এদিকে সেদিকে অগোছালো পড়ে আছে গোলাপের পাপড়ি, রজনীগন্ধার মালা। মাটিতে লেগে আছে আলতা, সিঁদুর, হলুদের দাগ। আজ সকালেই বাড়ীর একমাত্র কন্যার বিদায় হলো। সানাইয়ের সুর এখনো পুরোপুরি মিলিয়ে যায়নি। আত্মীয় স্বজনদের মজলিশটা ঠিক জমছে না যদিও এখন। পাড়া প্রতিবেশীরা কেউ বলল – ‘আহা কি লক্ষ্মী মেয়েই না ছিল। শ্বশুর বাড়ী আলো করে থাকবে।’ কেউ বলল – ‘অবশেষে বাবার মাথার বোঝা নামলো।’ কেউ আবার বলল- ‘এমন শ্বশুরবাড়ি সবার হয় না। সোনার কপাল করে এই মেয়ে এসেছিল।’
বাইরে তখন সন্ধ্যা নামছে। সিঁদুর রাঙা আকাশে এক ঝাঁক পাখি অনেক উঁচু দিয়ে উড়ে গেল। তাদের যেনো বাসায় ফেরার খুব দেরী হয়ে গেছে। বাগানের ধারে শিমুল গাছটার সব পাতা ঝরে গেছে। দূরের ছাতিম ফুলের গন্ধ পুরো বাড়ীতে ছড়িয়ে পড়ছে। কোথাও শঙ্খ বেজে উঠলো। আম গাছের তলায় সন্ধ্যার অন্ধকার জমাট বেঁধেছে। সেই গাছতলার অন্ধকারেই পড়ে রইলো এক বালিকার যুবতী বধূ হওয়ার কাহিনী। চির অশ্রুত।
লেখক পরিচিতি: বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার উপকন্ঠে রেলনগরী চিত্তরঞ্জন-এ জন্ম ও শৈশবের দিন অবসান। চাচা চৌধুরীর কমিক্স আর শুকতারার ছাপার হরফ-এর সাথেই শৈশবের অক্ষর ঘনিষ্ঠতা। পরবর্তী সময়ে রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক মহাবিদ্যালয়, নরেন্দ্রপুর থেকে রসায়নে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ। বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি ব্লকে পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক হিসাবে কর্মরত। সাহিত্য পাঠ ও রচনা ছাড়াও কুইজ এবং আবৃত্তি অন্যতম নেশা।
© Kothabriksha 2020, All Rights Reserved.
Be First to Comment