Last updated on April 11, 2020
সেই অর্থে বন্দীদশা আমার নেই-রোজই অফিস করছি, সপ্তাহশেষে বাড়ী ফিরছি- দিনলিপির তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তবে অফিসে স্বাভাবিক কারণেই ভিড়ভাট্টা কম- ভাবনাচিন্তার অফুরন্ত সময়।তারিখ মনে নেই, লেখার কারণগুলো যদিও বা স্পষ্ঠ। খাতার ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে রাখা ছিল, খুলতেই সব হুড়মুড়িয়ে পড়ল।
(১) চব্বিশ ঘন্টা ওই খ্যাপাটে মানুষটার সাথে- ঘরে ঘুরঘুর, বিছানায় চু-কিত-কিত অফিস যায় না- স্নান করতে বেলা গড়িয়ে বিকেল, সারাদিন কাগজ পড়ে-ভাইরাসের মতো ঘরময় ছড়িয়ে থাকে মৃত্যুর কারণ আর সংখ্যা কী অবলীলায় মনে রাখতে পারে। চব্বিশ ঘণ্টা ওই বিষাক্ত মানুষটার সাথে।
(২) ইদানীং ওই মুচকি হেসে ‘এই চলছে’ বলা লোকগুলোকে দূর থেকে আলিঙ্গন করতে ইচ্ছে হয়। কম কথা বলে- কাছে ঘেঁষে না- দেখলেই মাথা নীচু করে পুরনো বাজারের থলিতে মুখ ঢাকে।
এইসব মানুষদের জন্য ভাইরাসবিহীন ভালোবাসা।
(৩) ভেঙে পড়া একটা বাড়ির পাশেই আমার জলসাঘর, ছাদ ভেঙে পড়েছে- জানলার কপাটগুলোও ভাঙা
শুধু বাড়িটাই নয়-
প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ-শহর ভাঙছে, আমরা ভাঙছি- ক্রমশই ভেঙে পড়ছি।
পালকগুলো জড়ো করাই আছে,
সব স্বাভাবিক হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি সচল করতে হবে।
(৪) একদল ভাইরাস ঘুরে বেড়াচ্ছে, কলকাতার ভিক্টোরিয়ায়, দিল্লির জামা মসজিদে- মুম্বাইয়ের ধারাভিতে,
কেরালার শবরীমালাতে সন্ধ্যারতি দ্যাখে- বিহারে ভোজপুরি তালে নাচে।
আমার চৌহদ্দিতে সশব্দ পদচালনা-
প্রহরীর মতো গামবুট পড়ে মার্চপাস্ট।
চার দেওয়ালের ভিতর এক নতুন কুরুক্ষেত্র।
(৫) প্রতিরাতে ভাবি- এক বিশাল ঘুমের পর সকাল হবে,
আকাশে ঘন কালো মেঘ- ঝোড়ো হাওয়া;
রিক্সাওয়ালাদের দ্বিগুণ ভাড়া-
কনডাক্টার ‘হাওড়া-ধর্মতলা’ চিল্লাবে,
মাংসের দোকানে স্টেডিয়ামের ভীড়- হাজার টাকা কিলো।
লাইভ টেলিকাস্টে- নিমতলা মহাশ্মশানে ‘ভাইরাস’-এর শেষকৃত্য।।
Comments are closed.